কানাডা এবং পানামা খালের পর এবার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লক্ষ্য গ্রিনল্যান্ড। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ইচ্ছা প্রকাশ করে আলোচনার ঝড় তুলেছেন তিনি। যদিও গ্রিনল্যান্ড তার এই প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করেছে। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সংবাদ সংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
গ্রিনল্যান্ড, যা উত্তর আমেরিকার একটি স্বশাসিত দ্বীপ হিসেবে পরিচিত, ইউরোপের ডেনমার্কের আওতাধীন। কিন্তু ট্রাম্পের দাবি, বিশ্ব নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার স্বার্থে গ্রিনল্যান্ডের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানা অত্যাবশ্যক।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ট্রাম্প বলেন, “গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।” তবে গ্রিনল্যান্ড তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দেয়, তারা বিক্রি হতে রাজি নয়।
এই অঞ্চলের প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহ নতুন কিছু নয়। তার প্রথম প্রেসিডেন্সি (২০১৭-২০২১) সময়েও তিনি গ্রিনল্যান্ড কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। ২০১৯ সালে তিনি এর ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব এবং প্রাকৃতিক সম্পদের কথা উল্লেখ করে অঞ্চলটি কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, যা ডেনমার্কের কড়া প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়ে। সে সময় ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “গ্রিনল্যান্ড বিক্রির প্রশ্নই ওঠে না।”
গ্রিনল্যান্ড নিয়ে উত্তেজনার পাশাপাশি, ট্রাম্প সম্প্রতি প্রশান্ত-আটলান্টিক সংযোগকারী পানামা খাল নিয়েও মন্তব্য করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ থেকে পানামা অন্যায্য ফি আদায় করছে এবং খালটির নিয়ন্ত্রণ পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আনার হুমকি দিয়েছেন।
এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, “পানামা খাল পানামার অংশ এবং এটি আমাদের সার্বভৌম অধিকারের আওতায় থাকবে।”
প্রসঙ্গত, ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র পানামা খাল নির্মাণ করে এবং দীর্ঘদিন তা পরিচালনা করে। তবে ১৯৯৯ সালে এক চুক্তির মাধ্যমে এর নিয়ন্ত্রণ আনুষ্ঠানিকভাবে পানামার কাছে হস্তান্তর করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ জাহাজই এই খালের ওপর নির্ভরশীল।
ট্রাম্পের এসব মন্তব্য বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। তবে গ্রিনল্যান্ড ও পানামা উভয়েই তাদের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করেছে।
Leave a Reply