ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছেন জেনেক্স ইনফোসিসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমামের চারটি প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কমিটি ঋণ দেওয়ার জন্য কোনো সুপারিশ না করলেও ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এসব ঋণ অনুমোদন করেছে। এর ফলে ব্যাংকটি কিছু অনিয়মের শিকার হয়ে লোকসানও করেছে, বিশেষত ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে।
এ সময় ইউসিবির চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্ত্রী রুকমিলা জামান, এবং নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তাঁর ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এছাড়া, মোহাম্মদ আদনান ইমাম যুক্তরাজ্যের নাগরিক, যিনি সেখানে আবাসন খাতে ব্যবসা পরিচালনা করেন।
২০১৮ সালে সাইফুজ্জামানের পরিবার ইউসিবির নিয়ন্ত্রণ নেয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তিত হয় এবং পরবর্তী সময়ে ব্যাংকের ঋণ বিতরণে অনিয়মের বিষয়টি উঠে আসে। ইউসিবির চেয়ারম্যান শরীফ জহির জানিয়েছেন, ব্যাংকটির শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এসব অনিয়মের তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে আবেদন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ইউসিবির অনুমোদিত ঋণগুলি, বিশেষ করে জেনেক্স ইনফোসিসকে দেওয়া, বর্তমানে খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে বলে জানা গেছে। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সাইফুজ্জামান চৌধুরী ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করলেও, আইন অনুযায়ী তিনি ব্যাংক পরিচালনায় থাকতে পারতেন না। নিরীক্ষায় জানা গেছে, সাইফুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে বেশ কয়েকটি বড় অঙ্কের ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া, ২০২১ সালে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার কিনতে ইউসিবি প্রায় ১০৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিল, কিন্তু পরবর্তীতে শেয়ারগুলোর বাজারমূল্য ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় ব্যাংকটি প্রায় ৭৮ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
এ ঘটনায় আরও কিছু ঋণ সংক্রান্ত অনিয়মের বিষয়ও উঠে এসেছে। ইউসিবি কর্তৃপক্ষের কাছে এসব বিষয় তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে, তবে এ বিষয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা এখনো কোনও মন্তব্য করেননি।
Leave a Reply