চট্টগ্রামের বাজারে গত এক বছরে আলুর দাম ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং পাঁচ বছরে এই বৃদ্ধির হার ১৩৭ শতাংশ। জানুয়ারি মাসে যেখানে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৬০ টাকা, বর্তমানে তা ৭৫ টাকা হয়ে গেছে, যা ২০২৪ সালের শুরুর দিকের সর্বোচ্চ দাম। বাজারে এই দাম বৃদ্ধির জন্য বিশেষজ্ঞরা বাজার নিয়ন্ত্রণে গরমিল, উৎপাদন তথ্যের সঠিকতা, এবং ফলন ক্ষতির কথা তুলে ধরছেন।
চট্টগ্রামের প্রধান পাঁচটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, পুরোনো আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায় এবং নতুন আলু ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। রিয়াজউদ্দিন বাজারে পুরোনো আলু ৭০ টাকায় এবং নতুন আলু ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ বছরে প্রায় ৩,৯২৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে এবং লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৫১ হাজার টন। কিন্তু, জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৫৬ হাজার টন আলু আমদানি হয়েছে।
আড়তদাররা জানান, আলুর উৎপাদন এবং চাহিদার মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। চাহিদার সঙ্গে মেলে না উৎপাদন, যা বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণ। তারা আরও বলেন, কৃষকের পর্যায় থেকে ক্রেতার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত সরকারি তদারকি বাড়ানোর প্রয়োজন।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে আলুর দাম প্রায় ১৩৭ শতাংশ বেড়েছে। ২০২০ সালে গড়ে ২৮-২৯ টাকা প্রতি কেজি হলেও বর্তমানে তা ৭৫ টাকার কাছাকাছি। বিশেষজ্ঞরা জানান, আলু সাধারণ তাপমাত্রায় দীর্ঘদিন ভালো থাকে না, তাই হিমাগারে সংরক্ষণ করা হয়। তবে, এবছর বন্যার কারণে সরবরাহ কমে গেছে এবং দাম বেড়েছে।
এছাড়া, চট্টগ্রামের চাহিদা মেটাতে আঞ্চলিক বাজার থেকে আলু আনা হয়, এবং মুন্সিগঞ্জের মতো এলাকা থেকে তা সরবরাহ করা হয়। তবে, গত কিছু বছরে আলুর উৎপাদন কমেছে এবং বন্যার কারণে এ বছরও তা নষ্ট হয়েছে। সরকারি তথ্যে আলু উৎপাদন বেড়েছে বলে জানানো হলেও, ব্যবসায়ীরা বলছেন, তা সঠিক নয়।
এদিকে, আমদানি করা আলুর পরিমাণ বৃদ্ধির পরও বাজারে দাম কমেনি। ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট চাহিদা ও উৎপাদন তথ্য থাকা উচিত, যাতে সংকট এবং দাম বৃদ্ধি রোধ করা যায়।
Leave a Reply